তাশরিকের দিনগুলোতে রোযা রাখার বিধান

প্রশ্ন

আমি প্রতি বৃহষ্পতিবার রোযা রাখি। ঘটনাক্রমে ১২ ই যিলহজ্জ বৃহষ্পতিবার পড়েছে এবং সেদিন আমি রোযা রেখেছি। আমি জুমার দিন শুনেছি যে, তাশরিকের দিনগুলোতে রোযা রাখা নাজায়েয। বৃহষ্পতিবার ছিল তাশরিকের তৃতীয় দিন। আমি যে, রোযা রেখেছি সে কারণে আমার উপরে কি কোন কিছু বর্তাবে? সত্যিকার-ই কি তাশরিকের দিনগুলোতে রোযা রাখা নাজাযেয; নাকি শুধু ঈদের প্রথম দিন আমরা রোযা রাখব না?

উত্তর

আলহামদুলিল্লাহ।

দুই ঈদের দিন রোযা রাখা হারাম। দলিল হচ্ছে আবু সাঈদ খুদরি (রাঃ) এর হাদিস; তিনি বলেন: “নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ঈদুল ফিতর ও ঈদুল আযহার দিন রোযা রাখতে বারণ করেছেন”।[সহিহ বুখারী (১৯৯২) ও সহিহ মুসলিম (৮২৭)]। আলেমগণ ইজমা করেছেন যে, ‘এ দুইদিন রোযা রাখা হারাম’।

অনুরূপভাবে তাশরিকের দিনগুলোতে রোযা রাখাও হারাম। তাশরিকের দিনগুলো হচ্ছে- ঈদুল আযহার পরের তিনদিন (১১, ১২ ও ১৩ই যিলহজ্জ)। যেহেতু নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন: “তাশরিকের দিনগুলো হচ্ছে- পানাহার ও আল্লাহ্‌কে স্মরণ করার দিন”।[সহিহ মুসলিম (১১৪১)]

উম্মে হানির আযাদকৃত দাস আবু মুর্‌রা থেকে বর্ণিত আছে যে, তিনি আব্দুল্লাহ বিন আমরের সাথে তার পিতা আমর বিন আসের কাছে যান। তিনি তাদের দুইজনের জন্য খাবার পেশ করে বলেন: খাও। সে বলল: আমি রোযা রেখেছি। তখন আমর (রাঃ) বললেন: খাও; রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এ দিনগুলোতে আমাদেরকে রোযা না-রাখার নির্দেশ দিতেন এবং রোযা রাখতে নিষেধ করতেন। ইমাম মালেক বলেন: এ দিনগুলো হচ্ছে- তাশরিকের দিন।[সুনানে আবু দাউদ (২৪১৮), আলবানী ‘সহিহ আবু দাউদ’ গ্রন্থে হাদিসটিকে সহিহ আখ্যায়িত করেছেন]

তবে যে হাজীসাহেব কোরবানীর পশু সংগ্রহ করতে পারেননি তার জন্যে এ দিনগুলোতে রোযা রাখা জায়েয। আয়েশা (রাঃ) ও ইবনে উমর (রাঃ) থেকে বর্ণিত তাঁরা বলেন: “যে ব্যক্তি হাদির পশু সংগ্রহ করতে পারে নাই সে ব্যক্তি ছাড়া তাশরিকের দিনগুলোতে অন্য কাউকে রোযা রাখার অবকাশ দেয়া হয়নি”।[সহিহ বুখারী (১৯৯৮)]

শাইখ উছাইমীন (রহঃ) বলেন: “তামাত্তু ও ক্বিরান হজ্জকারী হাদির পশু না পেলে তার জন্য এই তিনদিন রোযা রাখা জায়েয; যাতে করে রোযা রাখার পূর্বে হজ্জের মৌসুম শেষ হয়ে না যায়। এ ছাড়া অন্য কোন রোযা এ দিনগুলোতে রাখা নাজায়েয। এমনকি কোন ব্যক্তির উপর যদি দুই মাসের লাগাতর রোযা রাখা ফরয হয়ে থাকে সে ব্যক্তিও ঈদের দিন এবং ঈদের পর আরও তিনদিন রোযা রাখবে না। এ দিনগুলোর পর পুনরায় লাগাতর রোযা থাকা শুরু করবে”।[ফাতাওয়া রমাদান, পৃষ্ঠা-৭২৭]

আল্লাহ্‌ই ভাল জানেন।


সূত্র: ইসলাম জিজ্ঞাসা ও জবাব

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *